বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে জনপ্রিয় আসর ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবল। সারা বিশ্বেই এর আমেজ বিরাজ করে। আমাদের দেশেও তার বেতিক্রম নয়। সম্প্রতি নিজের জমি বিক্রি করে প্রায় ৫ কিলোমিটার একটি জার্মানির পতাকা বানিয়ে আলোচনায় এসেছেন।
এবার সেই সবচেয়ে বড় জার্মান পতাকার কারিগর মাগুরার কৃষক আমজাদ হোসেনকে (৬৫) সম্মান জানাতে জার্মানি ভ্রমণের সুযোগ দেয়া হচ্ছে। এ কারণে তাকে জার্মানি ভ্রমণ করতে নিয়ে যাওয়ার কথা জানান ঢাকার জার্মান দূতাবাসের কূটনীতিক ক্যারেন উইজোরা। খবর ডয়েচে ভেলে।
মঙ্গলবার সকালে মাগুরা নিশ্চিন্তপুর স্কুল মাঠে এই পতাকা প্রদর্শন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, আমজাদ জার্মানির জন্য এত বড় ভক্ত অথচ তিনি জার্মান দেখতে পারবেন না, তা তো হয় না।
আমজাদ যেন জার্মান যেতে পারেন তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান ক্যারেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন শিক্ষা ও সংস্কৃতি কর্মকর্তা তামারা কবির।
এ ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন মাগুরার এএসপি তারিকুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট হাসান সিরাজ সুজা, স্থানীয় চাউলিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হাফিজার রহমান ও জার্মান ফ্যান গ্রুপের সাইফুল ইসলাম কৌশিকসহ বিপুলসংখ্যক এলাকাবাসী।
অনুষ্ঠানে আমজাদ জানান, তিনি একবার কঠিন রোগে আক্রান্ত হন। পরে ২০০৫ সালে জার্মানির ওষুধ সেবনের মাধ্যমে তিনি সেই রোগ থেকে মুক্তি লাভ করেন। সেই থেকে তিনি জার্মানিকে মনেপ্রাণে ভালোবাসেন।
বিশ্বকাপ উপলক্ষে তিনি ২০০৬ সাল থেকে জার্মানির পতাকা বানাচ্ছেন। এবারের বিশ্বকাপে তিনি সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পতাকা বানিয়েছেন। যার খরচ সরবরাহের জন্য তিনি তার ১০ শতক জমি বিক্রি করেন।
২০১৪ সালের বিশ্বকাপে তিনি নিজের ৩০ শতক জমি বিক্রি করে সাড়ে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ জার্মানির পতাকা তৈরি করেছিলেন।
তিনি আরও জানান, এই পতাকা অভিযান চলবেই। এ বছর বিশ্বকাপে জার্মান চ্যাম্পিয়ন হলে ২০২২ সালের বিশ্বকাপে ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ পতাকা বানাবেন তিনি, যা মাগুরা ভায়না থেকে সীমাখালী পর্যন্ত পথজুড়ে প্রদর্শিত হবে।
বাংলাদেশে অবস্থিত জার্মান দূতাবাসের কর্মকর্তা ক্যারেন উইজোরা বলেন, আমরা আমজাদের এ উদ্যোগে অভিভূত। এটি এখন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জার্মান পতাকা। আমরা জানি আমজাদ অনেক কষ্ট করে এটি তৈরি করেছেন। তাই আমাদের কর্তব্য তার পাশে থাকা। এ ছাড়া আমজাদের জার্মানি সফরের বিষয়ে আমরা বিশেষভাবে উদ্যোগ নেব।
উল্লেখ্য, আমজাদ হোসেন মাগুরার সদর উপজেলার ঘোড়ামারা গ্রামের নেহাল উদ্দিন মোল্যার ছেলে। পেশায় একজন সাধারণ কৃষক।